কালিদাসের মেঘদূত(Meghdhoot) কালিদাস(Kalidas) রচিত একটি কাব্য। রাজশেখর বসু কর্তৃক অনুবাদ,অন্বয়,ব্যাখ্যা ও টীকা প্রদানকৃত।এখান থেকে পিডিএফ(PDF) আকারে পড়া যাবে।
মেঘদূত কালিদাস রচিত একটি কাব্য। প্রাচীন টীকাকারদের মতে এটি কেলিকাব্য, ক্রীড়াকাব্য, খণ্ডকাব্য বা মহাকাব্য; আধুনিক গবেষকগণ এটিকে “বর্ষাকাব্য”, “বিরহকাব্য” বা “গীতিকাব্য” নামে অভিহিত করেন।
বাঙ্গালীর ইতিহাস -নীহাররঞ্জন রায়
মন্দাক্রান্তা ছন্দে রচিত এই কাব্য কালিদাসের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং সম্পূর্ণ মৌলিক রচনা। আবার “শুদ্ধ বিরহকে অবলম্বন করে সংস্কৃত সাহিত্যের প্রথম ও পূর্ণাঙ্গ কাব্য(ও) মেঘদূত।
কালিদাসের মেঘদূত দুটি খণ্ডে বিভক্ত। যথা: “পূর্বমেঘ” ও “উত্তরমেঘ”। যদিও এই খণ্ডবিভাজন কবিকৃত নয়। “পূর্বমেঘ” ও “উত্তরমেঘ” অংশের শ্লোকসংখ্যা যথাক্রমে ৬৩ ও ৫৪। “পূর্বমেঘ” অংশের আলোচ্য বিষয় নিসর্গবর্ণনা;
অন্যদিকে “উত্তরমেঘ” অংশের আলোচ্য কুবেরপুরী অলকার বিলাসবৈভব ও যক্ষপ্রিয়ার বর্ণনা। একদল পাঠক “পূর্বমেঘ” অংশটিকে কাব্যের ভূমিকামাত্র মনে করে “উত্তরমেঘ” অংশটিকে মূল কাব্যের মর্যাদা দেন; অপর এক শ্রেণীর পাঠকের মতে, “উত্তরমেঘ” কৃত্রিম রচনা, তাই “পূর্বমেঘ”-ই শ্রেষ্ঠ।
যশোহর খুলনার ইতিহাস (২খণ্ড) -সতীশচন্দ্র মিত্র
কালিদাসের মেঘদূত কাব্যের সারবস্তুটি সরল অথচ কাব্যগুণসমন্বিত: কর্তব্যে অসাবধানতায় প্রভুর অভিশাপে যক্ষকে রামগিরি পর্বতের বিজন আশ্রমে নির্বাসিত হতে হয়।
সেখানে বসে আষাঢ়ের প্রথম দিবসে নববর্ষার মেঘ দেখে তারই মাধ্যমে অলকাপুরীর রম্যপ্রাসাদে তাঁর বিরহী প্রিয়ার উদ্দেশ্যে বার্তা প্রেরণ করবেন বলে মনস্থির করেন তিনি। বিরহের আতিশায্যে তিনি জড় ও জীবের ভেদাভেদজ্ঞান লুপ্ত হন।
তিনি মেঘকে জানাতে থাকেন, কোন কোন নগর, নদী ও পর্বত পেরিয়ে তাকে অলকায় পৌঁছতে হবে। কাব্যের এই অংশে প্রাচীন ভারতের এক অসামান্য ভৌগোলিক বিবরণ ফুটে উঠেছে।
এরপর যক্ষ কুবেরপুরী অলকা ও তাঁর বিরহী প্রিয়ার রূপলাবণ্য বর্ণনা করেছেন মেঘের নিকট। অবশেষে মেঘকে অনুরোধ করেছেন, প্রিয়তমার নিকট তাঁর কুশল সংবাদ নিবেদন করতে।