দ্য ফ্রোজেন অ্যান্ড্রয়েড মহাকাশ অনুসন্ধানের সাইন্স ফিকশন বইটি যাতে সৌরজগতের ভিন্নগ্রহে কিশোরী এক মেয়ের অ্যাডভেঞ্চার কাহিনী বর্নিত রয়েছে।
খাড়া ত্রিশ মাইল বরফস্তরের নিচে প্রবাহিত ছয় মাইল গভীর এক সাবটেরিয়ান সমুদ্র। শনি গ্রহের বরফমোড়া চাঁদের সেই অপার্থিব সমুদ্রে সাঁতার কেটে চলেছে পার্থিব এক কিশোরী মেয়ে।
সে একের পর এক আবিষ্কার করে চলেছে আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও দুর্গম জায়গাগুলো যেখানে মানব সভ্যতার পদস্পর্শ কোনকালেও পড়েনি।
হঠাৎই সমুদ্রতলদেশে অপ্রত্যাশিতভাবে সে আবিষ্কার করে মিলিয়ন বছর যাবৎ লুকায়িত থাকা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্ময়কর, সবচেয়ে শিহরণ জাগানো এক রহস্য। আর সেই রহস্য উন্মোচনে খাড়া ষাট মাইল বরফস্তরের নিচে অভিযাত্রীরা পরিচালনা করে উত্তেজনাপূর্ণ শ্বাসরূদ্ধকর অভিযান।
কিন্তু, তখনও কি কেউ জানত, হিমায়িত বরফের এই চাঁদে কী বিস্ময় আপেক্ষা করছে মানব সভ্যতার জন্য?
দ্য ফ্রোজেন অ্যান্ড্রয়েড এর পটভূমিঃ
১৯৭৭ সালে ভয়েজার-২ নভোযানটি পৃথিবী থেকে উৎক্ষিপ্ত হয়ে ১৯৮১ সালে শনির বলয়ে পৌঁছে। যাত্রাপথে নভোযানটি শনির উপগ্রহ অ্যানসেলাডাসকে পাশ কাটানোর সময় তার কিছু ছবি উঠিয়ে পৃথিবীতে প্রেরণ করে।
সত্তোর হাজার মাইল দূর থেকে তোলা ছবিগুলোতে দেখা যায় শনির সেই উপগ্রহটা কাঁচের মার্বেলের মতো চকচকে মসৃণ আর তার পৃষ্ঠতল সফেদ বরফে আবৃত।
পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালের ১৫ই অক্টোবর নভোযান ক্যাসিনি; পৃথিবী থেকে উৎক্ষিপ্ত হয়ে দীর্ঘ সাত বছর শূন্যযাত্রা শেষে ২০০৪ সালের ১লা জুলাই শনির অর্বিটে প্রবেশ করে।
মিশনের মূল লক্ষ্যানুযায়ী ২০০৫ সালের ১৪ই জানুয়ারী ক্যাসিনির চন্দ্রযান হাইগেন্স, মূলযানটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে শনির অন্য একটি উপগ্রহ টাইটানে সফলভাবে ল্যান্ড করে এবং মিশনের লক্ষ্য অর্জিত হয়।
অর্বিটারের ব্যাটারীর আয়ুষ্কাল শেষ হওয়া অব্দি ক্যাসিনি শনির চতুর্দিকে পরিক্রমন করে বিভিন্ন উপচন্দ্রের চিত্র ধারণ ও জটিল কেমিক্যাল কম্পোজিশন নির্ধারণ ও বিশ্লেষণ করা আরম্ভ করে।
আরও বই
হঠাৎই অপ্রত্যাশিতভাবে ২০০৫ সালে ক্যাসিনি অ্যানসেলাডাসের দক্ষিণ মেরুতে প্রায় শ’খানেক বাষ্পের ফিনকি দেখতে পায়। নীলগ্রহের বিজ্ঞানীরা এবার নড়েচড়ে বসে। তারা স্পেশক্রাফটের ক্যামেরাগুলো অ্যানসেলাডাসের দিকে তাক করে যা দেখতে পায় তা এক কথায় অবিশ্বাস্য, মহাবিশ্ব সম্পর্কে তাদের হিসাব নিকাশ পরিবর্তিত হয়ে যায়।
সূর্য থেকে এত দূরে বহিঃস্থ সৌরজগতের কোন গ্রহ-উপগ্রহে পানি যে তরল অবস্থায় থাকতে পারে তা ছিল সকল বিজ্ঞানীদের ধারনারও অতীত।
ক্যাসিনি আবিষ্কার করে সৌরজগতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা; অ্যানসেলাডাস, যে কিনা একটি আস্ত মহাসাগর মিলিয়ন বছর যাবৎ লুকিয়ে রেখেছে সব লোকচক্ষ্মুর আড়ালে, নিজের বক্ষে। কিন্তু, তখনও কি কেউ জানত, বরফের এই চাঁদে কী বিস্ময় আপেক্ষা করছে মানব সভ্যতার জন্য?