মুসলিম বাংলার মনীষা মোহাম্মদ আলী চৌধুরী রচিত মুসলিম বাংলার মনীষীদের একটা সুন্দর বই।
মুসলিম বাংলার মনীষা বইয়ের লেখকের কথা
ঐতিহ্য-বিশ্মত জাতি মাত্রই আত্মবিশ্বত। যে জাতি তার অতীত দিনের কাণ্ডারীদের ভুলেছে, সে জাতি একাধারে অতীতের প্রেরণা, বর্তমানের সৃজনশীলতা ও ভবিষ্যতের দ্বারকে করেছে রুদ্ধ।
কেননা আত্ম-পরিচয়হারা জাতি ভাসমান উদ্ভিদের মতই স্থিতিহীন। অথচ বাংলার মুসলিম রেনেসার যারা অগ্রদুত, উনবিংশ শতকের সেই দিগন্তপ্রসারী পরাধীনতা, গোঁড়ামী ও সাবিক অধ:পতনের যুগে ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাধনাবলে যারা রাহুগ্রস্ত জাতির ভাগ্যাকাশে আলোর দীপালী জ্বালাবার দায়িত্ব স্বচ্ছায় গ্রহণ করেছিলেন, সাহিত্য, সাংবাদিকতা, সমাজ-সংস্কার, রাজনীতি সর্ধক্ষেত্রে যার।
অগ্রণী ভূমিকা পালন করে স্বর্ণোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও স্বাধিকার এবং আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের সোপান রচনা করে গেলেন, তাদের অনেকেরই স্মৃতি আজ বিশ্বতির কাফনে ঢাকা পড়ে গেছে।
ছু’একজন যদিও বা এখনও নামসর্বস্বরূপে মানুষের স্মৃতিপটে প্রদীপের মত মুটিম করে জ্বলছেন, তবু তাদের কীরতি ও অবদান আমাদের অনেকেরই নিকট সম্পূর্ণরূপে অজ্ঞাত রয়ে গেছে।
কায়কোবাদ, ইসমাঈল হোসেন সিরাজী প্রমুখ না এলে নজরুল, শেরেবাংলা প্রমুখের আবির্ভাব হত কিনা সন্দেহ। এঁদের প্রত্যেকেই আমাদের জাতীয় জীবনের এক-একটি আলোক স্তম্ভ এবং স্বতন্ত্র জাতীয় সত্তার ভিত্তি রচনাকারী। হিন্দু সমাজে রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম প্রমুখের যে আসন, বাংলার মুসলিম রেনেসার ক্ষেত্রে এরা অনেকটা সে আসনের যোগ্য দাবীদার।
জাতীয় জীবনের শিরা-উপশিরায় ফন্তুধারার মত যাদের অবদান নিঃশব্দে প্রবহমান, তাদের প্রতি অবহেলা তাদের ঋণেরই অস্বীকৃতি।
আমাদের জাতীয় স্বার্থে ই এ সকল যুগন্ধর পুরুষদের কার্যকলাপ ও অবদান ব্যাপকভাবে আলাচিত ও প্রচারিত হওয়া অত্যাবশ্যক।
আরও পড়ুন
কেননা তাদের অনুপ্রেরণা আমাদের ভবিষ্যতের দিশারী ও আলোক বর্তিকাস্বরূপ সেজন্যেই গ্রন্থে উল্লেখিত মনীষীদের আদর্শ জীবনী লিপিবদ্ধ করতে আমি উদ্যোগী হয়েছিলাম। তারই ফসল এই গ্রন্থ।
বলাবাহুল্য এ আমার অতি ক্ষুদ্র ও নগণ্য প্রয়াস মাত্র। প্রথম সংস্করণের সীমাহীন মুদ্রণ-প্রমাদ যতটুকু সম্ভব সংশোধন করা হলো। তবু অনিচ্ছাকৃত ক্রুটিসমুহের জন্যে পাঠকের ক্ষমা-সুন্দর
দৃষ্টি কামন। করছি।
-লেখক
মুসলিম বাংলার মনীষা বইয়ের পিডিএফ লিংক